কাজকেরিয়ার অনলাইন নিউজ ডেস্ক: সুন্দরবন উপকূলে ন্যাচারাল ম্যানগ্রোভের কীভাবে জন্ম হয়, তা আমরা অনেকেই জানি না। সুন্দরবনের একটা বড় অংশের মানুষ এটা জানেন বাঁচার তাগিদে। সুন্দরবনের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণভাবে নদীর পাড়ে বীজ জলে পড়ে তা ভাসতে ভাসতে এসে নদীর তীরে আটকে যায়। এরপর তা পলির সঙ্গে ধানি ঘাস পেয়ে ন্যাচারাল ম্যানগ্রোভের জন্ম হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় অনেকটা সময়ও লাগে।
আম্ফান তাণ্ডবে সুন্দরবন অঞ্চলের নদীর পাড় এখন অনেক জায়গায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তাই পলি জমার কোনও সম্ভাবনা এখনই নেই। স্বাভাবিক নিয়মেই ম্যানগ্রোভ জন্মানোর সম্ভাবনা অনেকটাই কমে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবন অঞ্চলে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের বসবাস। ওই বাদাবনের মানুষদের বড় অংশই জানেন, ম্যানগ্রোভ অরণ্যের কতখানি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
একপ্রকার প্রাণের দায়ে সেখানকার মানুষ ম্যানগ্রোভ রোপণ করে থাকেন। গ্রামীণ মহিলারাও ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজে যুক্ত হন। এখন ১০০ দিনের কাজে ম্যানগ্রোভ চাষ ও নদীর ধারে গাছ লাগানোর প্রক্রিয়া চলেছে। তবে এইসব কাজে স্থানীয়ভাবে নানা অভিযোগও রয়েছে। ১০০ দিনের কাজে পরিকল্পনামাফিক সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ লাগানোর বন্দোবস্ত করা উচিত বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
আবার সুন্দরবনের গাছ কাটা ও বন্ধ করার তৎপরতাও সেভাবে নেই বলেও একাংশের অভিযোগ। ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষা করতে সার্বিক পদক্ষেপের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপের ম্যানগ্রোভ ক্রমশ আলগা হয়ে যাচ্ছে। এরপর অল্প ঝড়েই ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলে তাঁরা মনে করেন। দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ না নিলে আরও সঙ্কট বাড়বে বলে দাবি করেছেন গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
এক্ষেত্রে কঠিন ও কঠোর কিছু পদক্ষেপেরও প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে সুন্দরবন বাঁচবে না। পাশাপাশি কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে আগামী দিনে আরও বিপদ বাড়বে।