কাজকেরিয়ার অনলাইন নিউজ ডেস্ক: গাছ ও জঙ্গলকে বাঁচিয়ে তোলার মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর স্বাস্থ্য ফেরাতে পারি। রাষ্ট্রপুঞ্জের “ট্রিলিয়ন ট্রি” প্রকল্পের মুখ্য বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা তথা ইটিএইচ জুরিখের প্রধান টম ক্রোদার জীব বৈচিত্র নিয়ে কাজ করে থাকেন। তাঁর মতে, জল, বাতাস, খাবার সবকিছুই আসে গাছ থেকে। মাটির ক্ষয়রোধও করে থাকে গাছ। আবার আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন আসে গাছ থেকেই। পাশাপাশি বাতাস থেকে কার্বন শুষে নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোখার কাজটা গাছই করে।
টম ক্রোদার উদ্বেগের চিত্রটাও তুলে ধরলেন। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি গাছ রয়েছে। সভ্যতার শুরুতে দ্বিগুণ ছিল। উদ্বেগের বিষয়– এখন বছরে প্রায় হাজার কোটি করে গাছ কমছে। স্বাভাবিকভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। পাশাপাশি জীব বৈচিত্রেরও ক্ষতি হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি আরও জানিয়েছেন, আমরা সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, বিশ্বজুড়ে পরিত্যক্ত যেসব জমি পরে রয়েছে, তাতে কম করে ১ লক্ষ কোটি নতুন গাছ লাগানো সম্ভব। এটা করতে পারলে উপকার হবে। মানুষকে গাছ লাগানোতে উৎসাহী করাই রাষ্ট্রপুঞ্জের “ট্রিলিয়ন ট্রি” অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।

একদিকে পরিবেশ, অন্যদিকে অর্থনীতির সহায়ক হবে এমনটা করতে পারলে। অন্যদিকে, বর্তমান বিশ্বের যা পরিস্থিতি তারজন্য অনেকটাই দায়ী প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বেড়ে যাওয়া। প্রকৃতিকে জয় করার অদম্য প্রচেষ্টায় আমার ভুলে গেছি এই প্রকৃতিরই একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। “টাইমস ইভোকস”-এর বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গাছ হল বিজ্ঞানের সবথেকে বিস্ময়কর সৃষ্টি। এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নানা প্রজাতির প্রাণীকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়াও প্রতিটি গাছ গড়ে ২ জন মানুষকে পরিশুদ্ধ বাতাস দিয়ে থাকে। বাতাসকে ঠান্ডা রাখার কাজেও গাছের অবদান রয়েছে।
আবার বায়ুমণ্ডলের ক্ষতিকারক রাসায়নিক দূর করা ছাড়াও কার্বনকে শুষে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ধুলো, ধোঁওয়া এবং ক্ষতিকর গ্যাস শুষে নিয়ে থাকে গাছ। গাছের পাতা নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার শোষণ করে থাকে। একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, পৃথিবীর অন্তত ৪৬ শতাংশ বনভূমি কেটে ফেলা হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়েছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হেনরি সোলোন গ্রেভস জানিয়েছেন, এই বিশ্বের সু-স্বাস্থ্যের জন্য জঙ্গল করা খুবই প্রয়োজন। পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম এটা বুঝতেই হবে মানুষকে।