Home Miscellaneous প্রতিদিনই হোক ‘বৃক্ষদিবস’

প্রতিদিনই হোক ‘বৃক্ষদিবস’

19
0
tree-plant
tree-plant

কাজকেরিয়ার অনলাইন নিউজ ডেস্ক: বৃক্ষই আমাদের রক্ষাকর্তা। গাছই আমাদের প্রাণ। আমাদের বাঁচিয়ে রাখার চাবিকাঠি হল গাছ। ফল দিয়ে, ফুল দিয়ে গাছ যেমন আমাদের পাশে দাঁড়ায়, তেমনি জীবনদায়ী অক্সিজেন দিয়েও আমাদের প্রাণ বাঁচায়। কাঠফাটা রোদ্দুরে স্বস্তি এনে দেয় গাছের ছায়া। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গাছের অবদান অনস্বীকার্য। মাটিকে শক্ত করে ধরে রাখতেও গাছের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। তাই বৃক্ষরোপনের অসীম গুরুত্ব রয়েছে মানব সমাজে। এছাড়াও গাছ থেকে আমরা জ্বালানি কাঠ ও আসবাব তৈরির মূল্যবান কাঠও পেয়ে থাকি।

অতএব মানুষের জীবনে গাছের ভূমিকা অপরিসীম। সর্বোপরি রয়েছে তার আশ্রয় ও খাদ্যের নিরন্তন যোগান। বৃক্ষরোপণ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি, সুষ্ঠু পদ্ধতিতে গাছ লাগানো। গাছ একটি দেশের জলবায়ু ও তার অবস্থার উপর যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। সমগ্র বিশ্বের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য একান্তভাবে প্রয়োজনীয় গাছ। মানুষের জীবনের জন্য তা অপরিহার্য। কারণ, গাছপালা ভিন্ন আমাদের অস্তিত্ব ধরে রাখা সম্ভব নয়। গাছেরা আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে। অতএব, গাছহীন জীবন ও ভুবন দুই-ই কষ্টকল্পনা। পরিবেশ সতেজ রাখতেও অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে গাছেদের।

আবার প্রকৃতির সৌন্দর্যও রক্ষা করে থাকে বৃক্ষ। আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখে গাছ। বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখিয়েছেন, একটি গাছ সারা জীবনে আমাদের ২৬ লক্ষ টাকার অক্সিজেন দেয় একেবারে নিখরচায়। এরা আমাদের ভূমিক্ষয় থেকেও রক্ষা করে। ঝড়ের তাণ্ডবে নিজেরা বিক্ষত হয়ে মানবজমিনকে বাঁচিয়ে রাখার পিছনেও গাছেদের ভূমিকা রয়েছে। উল্লেখ করা যায়, আয়লা, বুলবুল, আম্ফান প্রভৃতি ঝড় সামলে সুন্দরবনের অরণ্য ও গাছ-গাছালি জনজীবন ও প্রাণীকূলকে বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট হয়েছে বারেবারেই।

অন্যদিকে, গাছপালা থেকে আমরা পেয়ে থাকি শস্য, সবজি ও ফলমূল যা আমাদের খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে। বেঁচে থাকার জন্য তারাই আমাদের ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে আজ গাছ কেটে ফেলছে প্রতিনিয়ত। যা আমাদের ও পরিবেশের ধ্বংসের পথ প্রসারিত করে দিচ্ছে। পৃথিবী আমাদের বসবাসের পক্ষে অনুপযুক্তও হয়ে উঠছে ক্রমশ। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রতি বছর গাছ লাগানো ছাড়া অন্য আর কোনও পথ নেই।

বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রতি বছরের ৫ জুন তারিখটিকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ বিশ্ব পরিবেশদিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত যে হারে বৃক্ষনিধন চলছে তাতে শুধুমাত্র একটি বিশেষ দিনে গাছ লাগালে চলবে না। প্রতিটি দিনকে করে তুলতে হবে বৃক্ষরোপণ দিবস। আপনার ঘরের উঠোনে কিংবা আশেপাশে যদি একটুও ফাঁকা জায়গা পান তো সেখানেই রোপণ করুন একটি চারা। এভাবে এই অভ্যাসকে ছড়িয়ে দিন ব্যাষ্টি থেকে সমষ্টিতে। ক্ষুদ্র সমষ্টি থেকে বৃহদায়তনের সমষ্টিতে।

তবেই হয়তো অচিরে ভবিষৎ প্রজন্মের বাসযোগ্য হয়ে উঠবে এই ধরিত্রী। তবেই ‘একটি গাছ, একটি প্রাণ’—- এই স্লোগান আর পুথির পাতায় আটকে না থেকে পর্যবসিত হবে বাস্তবতায়। তাই আসুন, বিশুদ্ধ বাতাস নিতে প্রতিদিনই আমরা নিয়ম করে গাছ লাগানোর অভ্যাস গড়ে তুলি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here