কাজকেরিয়ার অনলাইন নিউজ ডেস্ক: শহরগুলিতে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণের ওপর বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আম্ফান তাণ্ডবে বহু গাছের অকাল মৃত্যু আমরা দেখলাম। এর জেরে কলকাতা শহর ও শহরতলীর পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব পড়বে এবং বেড়ে যাবে তাপমাত্রা। এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শ্বাসকষ্ট সহ দূষণজনিত রোগ মাত্রাছাড়া হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে পরিবেশকর্মীরাও। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটানি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়ে অসংখ্য গাছ পরে গেলেও এখনই অক্সিজেনের ঘাটতি হবে না। তবে জীববৈচিত্রের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। অন্যদিকে, ভবিষ্যতে শহরে গাছ লাগানোর ক্ষেত্রেও উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, শিকড় মাটির অনেক গভীরে প্রসারিত হতে পারে এমন গাছই শহরে লাগানো প্রয়োজন। তাহলে ঝড়ে সহজে গাছ উপড়ে পড়বে না।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষণ কমাতে পারে এবং শব্দ শোষণ করতে পারে বা রাতে আলো কম প্রতিফলিত হয় এমন গাছই শহরে লাগানো উচিত। যেমন — ছাতিম, কাঠবাদাম, মুচকুন্দ চাঁপা, পুত্রাঞ্জিভা, বট, অশ্বথ, আম, কাঁঠাল, রুদ্রাক্ষ, মেহগিনি, জারুল, অশোক প্রভৃতি। পাশাপাশি পুকুর ও খালপাড়ে ম্যানগ্রোভ, সুন্দরী, চাককেওড়া, বোলা ও হাবলি গাছ লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, ঝড়ে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কলকাতার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়বে। ধূলিকণার পরিমাণও বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে। পরিবেশকর্মীরাও বর্তমান পরিস্থিতিতে গাছ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ছাতিম গাছ দূষণ শোষণে এগিয়ে রয়েছে।
আবার কাঠবাদাম, মুচকুন্দ চাঁপা, পুত্রাঞ্জিভা প্রচুর পাতাবিশিষ্ট হওয়ায় শীতল পরিবেশ তৈরি করে। বট, অশ্বথ বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করে থাকে। আম, কাঁঠাল ফল দেয় ও পাখিদের আশ্রয়স্থল। রুদ্রাক্ষ, মেহগিনি, জারুল ও অশোক ওষুধ সামগ্রীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আবার ব্যারিটোনিয়া রেসিমোসা বেশি পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে সক্ষম।